
কর্মমুখী রাজনীতি ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ
আমরাই গড়বো নতুন বাংলাদেশ।
আমাদের একে অপরের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে, আমরা নিজেরাই নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। একই সঙ্গে, দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ওপর দৃঢ় আস্থা রাখাও জরুরি।
বাংলাদেশের প্রতি সেই বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব। এটি এই প্রজন্মের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।
বিভাজন নয়, চলুন, ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একসঙ্গে গড়ে তুলব নতুন বাংলাদেশ।
আকরাম হুসাইন
ছাত্রনেতা | মানবাধিকারকর্মী | সংগঠক
আমি জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)-এর যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা চলাকালীন সময়েই আমি ছাত্র অধিকার পরিষদের একজন সংগঠক হিসেবে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমি আন্দোলনের প্রথম সারিতে ভূমিকা রাখি এবং পরবর্তীতে সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করি।
আমার রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয় বিভিন্ন ছাত্র ও নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঐক্য গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে। মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান নেওয়ার ফলে আমাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার, অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, মোদিবিরোধী প্রতিবাদ, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন, এবং আবরার ফাহাদ হত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ বিগত কয়েকবছরের প্রতিটি আন্দোলনে আমি সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দিয়েছি।
সর্বশেষ, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে আমি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদান করি এবং স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট লিয়াজো কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এই সমস্ত অভিজ্ঞতা থেকেই আমি আজও দেশের তরুণ প্রজন্মকে সংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছি—একটি সহনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে গঠিত সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যাশায়।
স্বাধীনতাই হলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কাজ আর সম্মানের মতো মৌলিক অধিকার যেন আর কারো স্বপ্ন না থাকে—এই লক্ষ্যেই বাস্তব পরিবর্তনের সূচনা হোক। এই দেশ বদলাবে আমাদের ভাবনায়, কাজের শক্তিতে, আর সাহসীকতায়।
আমার মিশন
- আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ-
- নিরাপদ, ন্যায়ভিত্তিক ও সমতা-নির্ভর বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।
- কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে।
- তরুণ নেতৃত্বের বিকাশ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে।
- দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে।
- প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষায় অটল থাকতে।
আমার ভিশন
- আমি এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি-
- যেখানে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ ও মর্যাদা ভোগ করবে।
- যেখানে মতপ্রকাশ, চিন্তা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে থাকবে পূর্ণ স্বাধীনতা।
- যেখানে ঐক্য, মানবতা ও নৈতিকতা হবে সমাজের মূল ভিত্তি।
- যেখানে প্রযুক্তি ও তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্জিত হবে অর্থনৈতিক
- স্বনির্ভরতা। এবং যেখানে জনগণের স্বার্থই হবে রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য।
তরুণ চিন্তার নতুন গতি,তাদের শক্তিতে
গড়ে উঠবে নতুন বাংলাদেশ!
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণের হাতে। আর সেই জনগণের সবচেয়ে উদ্যমী ও সম্ভাবনাময় অংশ হলো তরুণ সমাজ। আমি বিশ্বাস করি, আজকের তরুণরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়বে।
তাদের মধ্যে রয়েছে অফুরন্ত শক্তি, উদ্দীপনা ও নতুন কিছু নির্মাণের সাহস। আমি নিজে যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শিখেছি, সেগুলো আমি পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাই, যাতে তারা বহুদূর যেতে পারে, আরও সুন্দরভাবে সমাজকে বদলে দিতে পারে।
তরুণদের যদি আমরা সময়োপযোগী শিক্ষা, দক্ষতা এবং সুযোগ দিতে পারি, তবে তারাই বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে নেতৃত্বের উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবে। তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়ন কেবল সমাজের উন্নয়নের উপাদান নয়- এটি একটি নতুন দিগন্তের সূচনা, যেখানে তারা পরিবর্তনের বাহক হবে, নেতৃত্ব দেবে, এবং দেশের স্বার্থে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে এগিয়ে আসবে। আমি তাদের পাশে থাকতে চাই, তাদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে, এবং একটি সহনশীল, সৃজনশীল ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।
কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, কার্যকর পরিকল্পনায় গড়ে উঠবে বাসযোগ্য ও সুরক্ষিত এলাকা
মোহাম্মদপুর-১৩ আসনের বাসিন্দারা প্রতিদিন বাস্তব জীবনের নানা ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশ, নিরাপত্তা, জীবনমান ও নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্রে রয়েছে দৃশ্যমান ঘাটতি। এখন সময় এসেছে, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বাস্তবভিত্তিক কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এসব সমস্যার টেকসই সমাধান নিশ্চিত করার।

অপরাধমুক্ত ও নিরাপদ এলাকা
নিশ্চিতে আমাদের অঙ্গীকার
চুরি, ছিনতাই, মাদক সন্ত্রাস ও গ্যাং কালচারের কারণে মোহাম্মদপুরে নিরাপত্তাহীনতা আজ একটি বাস্তব ও উদ্বেগজনক বাস্তবতা। আমরা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই অপরাধ প্রবণতা রোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং জনসাধারণের সমন্বিত সহযোগিতায় গড়ে তুলব একটি কার্যকর ও টেকসই নিরাপত্তা কাঠামো।
এ লক্ষ্যে, প্রতিটি ওয়ার্ডে গঠন করা হবে ‘কমিউনিটি সেফটি প্রোগ্রাম’ যেখানে স্থানীয় নেতৃত্ব, সুশীল সমাজ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অংশগ্রহণে থাকবে নিয়মিত নজরদারি, সচেতনতা কার্যক্রম ও দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা।

কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও মৌলিক সেবা-
সবার প্রাপ্য অধিকার
বছরের পর বছর ধরে মোহাম্মদপুর ১৩ নম্বর আসনের মানুষ অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। এই বাস্তবতা বদলানো এখন সময়ের দাবি।
আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি পরিকল্পিত নগর জীবনের ভিত্তি গড়ে তুলতে—যেখানে থাকবে মানসম্মত আবাসন, বিশুদ্ধ পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা, স্থায়ী কর্মসংস্থান এবং শিশুশিক্ষার টেকসই ব্যবস্থা।
কারও মৌলিক অধিকার বঞ্চিত হওয়ার নয়, মানুষ হিসেবে সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মূল ভিত্তি।

পরিবেশ ও নাগরিক উন্নয়ন
ড্রেনেজ সমস্যা, জলাবদ্ধতা, আবর্জনার স্তূপ এবং রাস্তাঘাটের দুরবস্থা, এসব এখন মোহাম্মদপুরবাসীর নিত্যদিনের দুর্ভোগ। এই বাস্তবতা আর মেনে নেওয়া যায় না।
আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই নগর গড়তে, যেখানে থাকবে সুপরিকল্পিত রোড মেইনটেন্যান্স, নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম এবং আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়ন।
শৃঙ্খলাপূর্ণ নগর ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা মোহাম্মদপুরকে করে তুলতে পারি বাসযোগ্য ও উন্নত একটি নগর মডেল।

শিক্ষাই শক্তি, দেশ গড়তে হলে
শিক্ষাকে দিতে হবে প্রথম স্থান
একটি রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে নিতে হলে, রাজনীতির মূলে রাখতে হবে মেধা ও মানবকল্যাণকে।
শিক্ষা কেবল জ্ঞানের ভিত্তি নয়, এটি একটি জাতির মেরুদণ্ড। তাই শিক্ষা হতে হবে সকলের জন্য সমানভাবে প্রাপ্য ও মানসম্পন্ন।
রাজনীতিতে শিক্ষিত, নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং একটি সচেতন সমাজ গঠনের জন্য শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিগত সময়গুলোতে সমাজে যে বৈষম্য, ভেদাভেদ ও বিভাজন তৈরি হয়েছে, তার উত্তরণ ঘটানোর অন্যতম কার্যকর উপায় হতে পারে একটি সমতা-নির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা।

তারুণ্য জাগলে সমাজ জাগবে,
গড়ে উঠবে আগামীর বাংলাদেশ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)-এর যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, জনগণের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ এবং তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণই একটি টেকসই ভবিষ্যতের ভিত্তি।
গঠনমূলক চিন্তা, জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব এবং সামাজিক ন্যায়ের দৃঢ় চেতনা নিয়ে আমি একটি ইতিবাচক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জনস্বাস্থ্যতে হবে অগ্রাধিকার
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতকে উন্নত করা শুধু প্রয়োজন নয়, এটি সময়ের দাবি। আমি চিকিৎসার মান বাড়িয়ে এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যাতে আর কাউকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে না হয়। আধুনিক সুবিধা, দক্ষ ডাক্তার ও সুলভ সেবা নিশ্চিত করলেই দেশের মানুষ নিজ দেশে আস্থা পাবে। স্বাস্থ্যসেবা হবে সবার জন্য সহজলভ্য, সম্মানজনক ও উন্নত।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানই প্রকৃত উন্নয়নের সূচনা। দুর্নীতি কেবল টাকা নয়, মানুষের আস্থা নষ্ট করে। আমি চাই, প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং প্রযুক্তি-নির্ভর কার্যক্রম চালু হোক, যেন জনগণ সহজেই জানে, কিভাবে, কোথায়,তাদের করের টাকায় কাজ হচ্ছে।
মানবাধিকার ও আইনের শাসন
আইনের শাসন ছাড়া ন্যায্য সমাজ গড়া সম্ভব নয়। মানবাধিকার মানেই শুধু অধিকার নয়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন। আমি চাই এমন একটি সমাজ, যেখানে মানুষ ভয় নয়, আস্থায় বাঁচে। আইনের চোখে সবাই সমান থাকবে—এটাই হবে আমার রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তি।
কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরন
সরকারি চাকরির পাশাপাশি তরুণদের মেধা কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা, স্থানীয় শিল্প ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য। প্রশিক্ষণ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও সহজ ঋণের মাধ্যমে গড়ে তুলবো একটি আত্মনির্ভরশীল কর্মক্ষম প্রজন্ম।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন
আজ মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টের কারণ বাড়তি খরচ যা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দিকে নিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি যদি সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ডিজিটাল মূল্যতালিকা নিধারন করা হয় তবে এমন একটি সমাজ গঠিত হবে, যেখানে ন্যায্য মূল্যে খাদ্য, ওষুধ, বাসস্থান পাওয়াটা হবে নাগরিক অধিকার।
আমরা যখন “ডিজিটাল বাংলাদেশ” বলি, তখন এর অর্থ হচ্ছে—নাগরিক সুবিধাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি শহর, যেখানে নাগরিক সেবা, স্মার্ট ট্রাফিক, সিসিটিভি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পরিবেশ—সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর ও জনগণ-কেন্দ্রিক হবে।
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ব এমন এক দেশ, যেখানে স্বপ্ন দেখা বিলাসিতা নয়,
নাগরিক অধিকার হবে।
প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণ, মর্যাদা রক্ষা এবং উন্নয়নের পথে সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই আমার অঙ্গীকার।
আমি বিশ্বাস করি, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ-এই চারটি ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে একটি পরিকল্পিত ও টেকসই ভবিষ্যৎ।
আসুন, আমরা সবাই মিলে গড়ে তুলি একটি সুন্দর, নিরাপদ ও আধুনিক বাংলাদেশ, যা হবে আগামী প্রজন্মের জন্য গর্বের জায়গা।